বৃষ্টির দিনে বৌদির হাতের উষ্ণতা
বৌদির ভেজা হাতটা যখন আমার বুক ছুঁয়ে গেলো, আমি নিজেকে আর সামলাতে পারছিলাম না…
সকাল থেকে আকাশের মুখটা ছিলো কালো। দুপুরের পর শুরু হলো টুপটাপ বৃষ্টি, আর বিকেলের দিকে বজ্রসহ একটানা ঝমাঝম। আমি সেদিন বাসায় একা ছিলাম। একটা প্রেজেন্টেশন করার কথা ছিল, কিন্তু আবহাওয়া আর মন—দুটোই অলস হয়ে ছিল।
হঠাৎ দরজায় শব্দ হলো—ধুপ ধুপ। খুলে দেখি পাশের বাসার রেশমা বৌদি দাঁড়িয়ে। বয়স ৩০, কিন্তু শরীরের বাঁক আর মুখের গোলাপি আভা দেখে কারো পক্ষে আন্দাজ করা মুশকিল।
শ্যামলা গায়ের রং, লম্বা চুল, বুকটা চোখে পড়েই বুঝিয়ে দেয় সহজে ৩৬-এর কম কিছু না। সেদিন গায়ে তার পাতলা পিঙ্ক কামিজ, ভিজে গায়ে লেগে আছে যেন দ্বিতীয় চামড়ার মতো।
আমি হকচকিয়ে বললাম,
— “বৌদি, কী হইছে?”
সে ভিজে কাঁপতে কাঁপতে বলল,
— “বাইরে এত বৃষ্টি, ছাদে যে কাপড় শুকাচ্ছিলাম সেটা নামাইতে গেছিলাম। দ্যাখছেন তো টিপ টিপ বৃষ্টি নামছে, হঠাৎ বিদ্যুৎ চইলা গেল! ভয়ে আমি দৌড় দিয়া আপনার দরজায় আইছি... একটু ভিতরে ঢুকতে দেন।”
আমি সরে দাঁড়াতেই ও ঢুকে পড়ল। ওর গায়ের ভেজা শরীর থেকে বৃষ্টির গন্ধ আসছিল—একধরনের মাতাল করা উষ্ণতা, ভেজা চুল কাঁধ বেয়ে ঝরে পড়ছে বুকের দিকে।
আমি তোয়ালে আনতে যাচ্ছিলাম, ও বলল—
— “না, দরকার নাই। একটু বসি, ভিজা গা শুকাইতে পারবো।”
বসার ঘরের সোফায় বসতেই ওর কামিজ বুকের কাছে লেপ্টে গেল। আমি চোখ সরাতে নিচের দিকে তাকালাম, কিন্তু মনে হচ্ছিল বুকের ভেতর আগুন জ্বলে উঠছে।
বৌদি টের পেয়ে হেসে বলল—
— “এইভাবে তাকাইস না, শরীর শর্দি লাগবে তাই ঢুইল্যা ঢুইল্যা আসছি। ভয় আনতে যাইও না!”
আমি বললাম,
— “তোয়ালে দেন, আমি দেই।”
ও বলল,
— “তোয়ালে লাগবো না, তবে হাতটা একটু গরম কিছু পাইলে মুছি।”
বলতে বলতে ও হাত বাড়িয়ে দিল, আর নিজের ভেজা আঙুল দিয়ে কপাল সরিয়ে রাখলো।
আমার বুকের ভেতর কেমন যেন মোচড় দিয়ে উঠছে। ওর চোখে জল ঝরার মতো চকচকানি, ঠোঁটদুটো ফুঁলানো, বুক ওঠানামা করছে দ্রুত।
ও বলল,
— “হাতটা এত ঠান্ডা লাগতেছে… জ্বর আইবো নাকি?”
আমি হাত বাড়াতেই ও হঠাৎ আমার হাত চেপে ধরল। পুরো ভেজা আঙুলের স্পর্শে শরীর শিউরে উঠল—ওর তালু গরম আর নরম।
ও আমার কাছে আরেকটু সরে বসল। আমরা এত কাছে যে ওর ভেজা কামিজ থেকে পানি নামছিল আমার হাঁটুতে।
বজ্রপাত হলো ‘ক্যাঁচ!’ করে।
ও চমকে উঠে বলল—
— “বাইরে ভীষণ ভয় লাগতেছে। যদি আরো জোরে পড়ে?”
ওর হাত আমার হাতে লেপ্টে রইল।
আমি বললাম,
— “চিন্তা করেন না, আপনি চাইলে ঘরে রাইখা যান। বাইরে الآن অসম্ভব।”
ওর চোখের নিচে দাঁড়ি, ঠোঁটের কোণে হালকা হাসি।
ও হঠাৎ চুল ঝাড়তেই বুকের কাপড়টা সরে গিয়ে ভিতরের ত্বক একটু দেখা গেল।
ও আমার চোখে চোখ রেখে বলল—
— “এত ভয় পাইছেন নাকি? শিরশির করছে দেহ?”
আমার ঠোঁটে কথা আটকে গেল।
ও বলল,
— “এক কাপ চা বানাইবেন? গা কাপতেছে…”
আমি উঠে রান্নাঘরে গেলাম। ভেতর থেকে ওর কণ্ঠ—
— “কাপড় যদি শুকায়া দিতেন, আরাম পাইতাম।”
ওর গলার স্বরে এমন সুর ছিল, যা মাথার ভেতর ঝড় তুলতে পারে।
আমি কাপড় বদলানোর কথা বলতেই ও বলল,
— “আপনার শার্ট দিয়া দেন। আমি কামিজ খুলে নিছি, ভেজা গায়ে ঠান্ডা লাগবে।”
গলায় কাঁপুনি নিয়ে বললাম,
— “আমি… আমি আনতেসি।”
আমি যখন শার্ট নিয়ে ফিরলাম, দেখি ও দাঁড়িয়ে আছে ড্রইংরুমে, নিজের কামিজের গলার বোতাম খুলতে খুলতে।
তার বুকের ভেতরটা রোদে গরম লুঙ্গির মতো টানটান, ভেজা কাপড়ের ভেতর থরথর করছে। ও শার্ট নিতে গিয়ে আমার আঙুলে ছুঁইল—ওর গরম হাত যেন বুক পুড়িয়ে দিল।
ও ফিসফিস করে বলল,
— “আপনের হাতে কাঁপুনি কেন? এত ঠান্ডা লেগেছে?”
আমি কিছু বলতে পারিনি। ও হেসে আরও কাছে এলো।
ও শার্ট পরে আমার সামনে বসতেই বুকের কাপড়ের ভেতর থেকে সুবাস বেরিয়ে আসছিল। ভেজা চুল পিঠ বেয়ে পড়ছে, চোখে লাজুক-মাতাল চাহনি।
ও হাত বাড়িয়ে বলল—
— “এই হাতদুইটা গরম করেন একবার। খুব ঠান্ডা লাগতেছে।”
ওর পুরো হাতটা আমার হাতের মধ্যে এনে রাখল, চোখে ঘন আলো।
বজ্রপাতের শব্দে ঘরটা কেঁপে উঠল, আলো নিভে গেল হঠাৎ।
অন্ধকারে শুধু ওর নিঃশ্বাস আর বুকের তাপ টের পাচ্ছিলাম।
ও ঠিক তখন গলা কাঁপিয়ে বলল—
— “বৃষ্টির দিনে কারো শরীর যদি পাশে গরম থাকে, ভয় কেটে যায়… তুমি থাকো পাশে?”
আমি আর কোনো কথা বলতে পারলাম না।
ওর হাত আমার বুক ছুঁয়ে গেল।
আর আমি বুঝলাম—
এই রাত আর শুধু বৃষ্টির শব্দে শেষ হবে না…

0 Comments