ভাবির ওড়না যখন উড়ে গেলো – পার্ট ০২ (শেষ পর্ব)
করিডোরের সেই শব্দটা থেমে যাওয়ার পর ঘর আবার নিস্তব্ধ হলো।
ভাবি এক হাত দিয়ে বুক জড়িয়ে ওড়নাটা ঠিক করছিল, আর অন্য হাতটা জানালার কাঠে রেখে গভীর নিঃশ্বাস নিচ্ছিল।
ওর পিঠটা এতটাই কাছে ছিল যে, মনে হচ্ছিল এক ইঞ্চি এগোলেই বুক আর পিঠ ছুঁয়ে যাবে।
আমি নরম গলায় বললাম—
— “খুলবো জানালাটা?”
ভাবি একটু ঘাড় ঘুরিয়ে আমায় দেখল। চোখে কেমন যেন ভিজে ঝাপসা ভাব—কিন্তু বিরক্তি নেই, ভয় নেই, বরং একটা চাপা টান টান উত্তেজনা।
— “হ্যাঁ… তবে ধীরে ধরো। বেশি টান দিও না, নইলে…”
কথা শেষ করল না, কিন্তু বাকিটা চোখই বলে দিল।
আমি সামনে এগিয়ে গিয়ে জানালার কাঠে হাত রাখলাম। ঠিক সেই মুহূর্তে আমার বুকের সঙ্গে ওর পিঠের দূরত্বটা যেন হাওয়ায় মিলিয়ে গেল।
ওদিক থেকে আসা ঘামের গন্ধ আর আতরের মিষ্টি ঘ্রাণ একসাথে এসে মাথা ঘুরিয়ে দিচ্ছিল।
আমার হাত উঠতেই ভাবি জানালার চৌকাঠের সঙ্গে আরেকটু চাপা পড়ে গেল।
তারপর হঠাৎ আমার কনুই ছুঁয়ে গেল ওর কোমরের পাশের দিক।
ভাবি কেঁপে উঠল—নরম একটা নিঃস্বাস বের হলো মুখ থেকে।
ও গলা নামিয়ে বলল—
— “পাশ থেকে ধরো… ওদিক দিয়ে চাপ দিলে খুলবে।”
আমি আরও কাছে গেলাম। এবার ওর পিঠ আর আমার বুকের মাঝে কোনো ফাঁক রইল না।
ঠাণ্ডা কাঠের জানালা আর গরম শরীরের মাঝখানে আমি যেন বন্দি হয়ে দাঁড়িয়ে আছি।
ওই সময় বারান্দার দিক থেকে একটা হালকা বাতাস এলো—আর সাথে সাথে ভাবির ওড়নের একটা কোণা আবার উড়তে গিয়ে সোজা আমার বুকে এসে লাগল।
আমি হাত বাড়িয়ে সেটা ধরতেই ভাবি ধীরে মাথা ঘুরিয়ে তাকাল।
চোখে কোনো প্রশ্ন নেই… তবু সব উত্তর লুকিয়ে আছে।
কিছুক্ষণ চুপচাপ তাকিয়ে থেকে ভাবি খুব নিচু স্বরে বলল—
— “ভাবলে ভুল হবে না… তবে এখন না…”
আমি ঠোঁট শুকিয়ে বললাম—
— “তাহলে কবে?”
ভাবি মুচকি হেসে বলল—
— “যেদিন এই দরজাটার চৌকাঠ আমরা ভেতর থেকে বন্ধ করবো… সেদিন।”
আমি দরজার দিকে তাকালাম—এখনও অল্প খোলা।
ভাবির চুল সামান্য ঘাড়ের পাশে নেমে আছে, বুকের কাছে ওড়না টেনে ধরলেও কাঁধের তাপ লুকানো যায়নি।
বাইরে গরম হাওয়া বইছে, ঘরে নিস্তব্ধতা জমাট বাঁধছে—
আর দরজাটা যেন অপেক্ষায় আছে…
কেউ একজন ভেতরে ঢুকে সেটা আস্তে করে ঠেলেই বন্ধ করবে বলে।
—চাপা আগুন এখানেই শেষ না… দরজাটা এখনও খোলা আছে। 🔥

0 Comments